বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর উপর হামলা এবং ভারতের বাহাদুরি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন গত ৮ অগাস্ট তার ফেইসবুক পোস্টে তার বিভাগের এক শিক্ষার্থীর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। কাবেরী গায়েন শেয়ার করার সময় লিখেছেন, “আমার বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রাবস্তী বন্দোপাধ্যায় এক এক জনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ’র পরে। নিরাপত্তার জন্য। যারা তাকে দুর্দিনে সাহায্য করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েও তিনি এক সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন : “আমার বাড়ি কেনো পাহারা দিতে হবে?” হ্যা, এই প্রশ্ন আমারও।

অগাস্টের পাঁচ তারিখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রেক্ষিতে এধরণের বেশ কিছু ঘটনার কথা আমরা জানছি।

গত রবিবার, ১১ অগাস্ট বাংলাদেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নামে দুইটি সংগঠন দাবি করেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের ৫২টি জেলায় সংখ্যালঘু মানুষের ওপর ২০৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু এবং বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি বিশেষ কমিটি গড়েছে ভারত সরকার। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে ব্যাপক আক্রমণ হচ্ছে, এই তথ্যের প্রেক্ষিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন, যারা বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক, হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করবেন। অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু এবং সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বিশেষ কমিটি গড়ল ভারত সরকার।” এই ঘটনা বাংলাদেশের জন্য খুব লজ্জার।

এইসব অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের বাহাদুরি দেখে আমার ভীষণ লজ্জা হয়। আশা করি আমাদের নোবেল বিজয়ী বর্তমান সরকার প্রধান ও একটু লজ্জা পাবেন। উড়ে এসে জুড়ে বসা ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার অতিদ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্টা করবেন বলে আশা করি। যদি তা না করতে পারেন তাইলে বাংলাদেশের জনগণ উনাকেও এই আসন থেকে লাথি মেরে ফেলে দিবে।

সংখ্যালঘুরা ভিন্ন কোনো গ্রহ বা দেশ থেকে আসেনি। তারা এ দেশেরই সন্তান। আমার যে অধিকার, তারও সেই অধিকার। কিন্তু একটা সুযোগের পেক্ষাপটে দুস্কৃতিকারীরা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করেছে অথবা যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চায় না, তারা করতে পারে।
যে কোনও মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার অনুরোধ জানাই দেশবাসীর প্রতি।দরকার হলে বর্তমান এই সরকারকে পদত্যাগের জন্য আবারো রাজপথে নামুন।

-সামছুল আলম জাবেদ
রাজনৈতিক ব্লগার ও মানবাধিকার কর্মী

Scroll to Top