ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সারা দেশে সহিংসতা, মন্দির ভাঙচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে সারা দেশে হিন্দুদের দুই শতাধিক বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে রোববার, ১১ অগাস্ট, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উদযাপন পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আমিও তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমার বাংলাদেশে যেমন স্বৈরাচারী হাসিনার জায়গা হয়নি ঠিক তেমনি সাম্প্রদায়িক কোনো অপশক্তির জায়গা হবে না।
দেশে বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচিতে দাবি-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সাথে আমরাও অংশগ্রহণ করছি। দেখি কোন মৌলবাদী শক্তি আমাদের ঠেকায়!
বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে প্রধান লক্ষ্য ছিল ‘বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা’। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে যে, সারাদেশে সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমি সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, মন্দির ভাঙচুর, বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সকল দুষ্কৃতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই। আমরা ইতিমধ্যে বলেছি যারা এগুলো করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যারা ভূমিচ্যুত হয়েছে তাদের ভুমি ফিরিয়ে দিতে হবে।
আমাদের দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যত হামলা হয়েছে সবক্ষেত্রে আমরা দায়মুক্তির সংস্কৃতি দেখেছি। ডক্টর ইউনূসের এই প্রশাসন দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে উনাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার অনুরোধ করছি। আপনাকে আমরা সম্মান করি, কিন্তু মনে রাখবেন দেশ ও দশের জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য, গণতন্ত্র ও সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আপনাকে ও আপনার অনভিজ্ঞ উপদেষ্টা মন্ডলীর এই ঠুনকো সরকারকে উৎখাত করতে পিছপা হবো না।
-জুনেদুল মান্না
মানবাধিকার কর্মী ও লেখক