বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, বিএনপি’র ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির রহমান, ও মৌলভীবাজারের জায়ফরনগর ইউনিয়নের বিএনপি কর্মী লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে যথাক্রমে তাঁদের মৃত্যুর সাড়ে ৩ বছর পর, ১ বছর পর, এবং ৬ বছর পর সম্প্রতি নাশকতার মামলা দিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিরোধী দল ও মত দমনের রাষ্ট্রীয় অপপ্রয়াসে অজস্র বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার যে লাগামহীন স্রোত, তাতে আজ আরও কিছু দৃষ্টিকটু উদাহরণ সংযোজিত হয়েছে।
নিউমার্কেট থানার মামলায় ৪ বছর আগে মৃত বিএনপি নেতা মো. আবু তাহের দাইয়াকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুকালীন অবস্থায় তাহের নিউমার্কেট থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ন পালন করছিলেন। ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আজ আড়াই বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বলপূর্বক গুমের শিকার হয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সুমন, অথচ তাঁকেও রেহাই দেয়নি ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ শেখ হাসিনার বিচার বিভাগ।
এসব বিভ্রান্ত ও প্রহনসমূলক রায়ের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয় শেখ হাসিনার অধীনে বিচার ব্যবস্থার বিচারহীনতা ও অন্যায় কর্মকান্ড, তথা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সর্বগ্রাসী অবক্ষয়, যা বছরের পর বছর ধরে চলছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ এবং বিচার বিভাগের একটি চিহ্নিত অংশ আজ নির্লজ্জভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা আওয়ামী লীগের অপরাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা যৌথভাবে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সকল শক্তির বিরুদ্ধে মানবতা লঙ্ঘনে লিপ্ত হয়েছেন।
এই অপশক্তি দেশজুড়ে বিস্তৃত বিএনপির অনিঃশেষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। এটি আজ স্পষ্ট যে, চলমান রাষ্ট্রীয় সহিংসতার অন্যতম মানদণ্ড বিএনপি’র বিভিন্ন কমিটিতে তালিকাভুক্ত সদস্যদের নাম অনুসরণ করে বেপরোয়া হামলা-মামলা ও গণগ্রেফতার। কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন বহুমুখী অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি’র ৫০ লক্ষ গণতন্ত্রমনা ও শান্তিকামী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করছে অবৈধ সরকারের অনুগত প্রশাসন, যা প্রকারান্তরে বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতির গভীরতাকেই ফুটিয়ে তুলে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার নেই। নেই জনগণের অধিকার। নেই নূন্যতম ব্যক্তি ও বাক স্বাধীনতা। দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ ও গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোকে সাথে নিয়ে, যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে, বিএনপি নিশ্চিত করবে জনগণের বিজয়। বিএনপি ফিরিয়ে দিবে জনগণের সেই লুন্ঠিত ক্ষমতা, যা আওয়ামী লীগ কেড়ে নিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এবং সত্য ও ন্যায়ের বিজয় ইনশাআল্লাহ অবশ্যম্ভাবী।
-তারেক রহমান
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল